মেয়েলোকের নামাজে দাড়ানো নিয়ম হানফি মাযহাব মতে কি ?
মেয়েলোকের নামাজে দাঁড়ানোর নিয়ম: হানফি মাযহাব মতে
হানফি মাযহাব অনুসারে, নারীর নামাজ আদায় করার পদ্ধতি পুরুষের তুলনায় কিছু ভিন্ন। এটি হাদিস এবং ফিকহের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়েছে। নামাজের সময় নারীর দেহের পর্দা, বিনয় ও আড়াল করার গুরুত্বকে বিবেচনা করে এই ভিন্নতা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নারীদের নামাজে দাঁড়ানোর নিয়ম
-
কিয়াম (দাঁড়ানো)
- নারীরা কিয়ামের সময় বিনয়ের সঙ্গে দাঁড়াবেন। হাত বুকের ওপর রাখবেন, বিশেষ করে হাত বাঁধার সময় ডান হাত বাম হাতের ওপর রাখবেন এবং বুকের নিচে রাখতে হবে।
- দলিল:
- ইবনু আবি শাইবা তাঁর মুসান্নাফ-এ উল্লেখ করেছেন:
"ইবনে আব্বাস (রাযি.) বলেন, 'নারীরা বুকের ওপর হাত রাখবে।'"
(মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা 390)
- ইবনু আবি শাইবা তাঁর মুসান্নাফ-এ উল্লেখ করেছেন:
-
রুকু (ঝুঁকানো)
- রুকু করার সময় নারীরা পুরুষদের মতো বেশি ঝুঁকবেন না। হাত হাঁটুতে রাখবেন, তবে হাঁটু সামান্য বাঁকা রাখবেন। তাদের দেহকে সম্পূর্ণ সোজা না রেখে বিনয়ের সাথে রুকু করতে হবে।
- দলিল:
- হাদিসে উল্লেখিত হয়েছে, নারীরা বিনয় ও গোপনীয়তার জন্য এভাবে রুকু করবেন।
-
সিজদা (মাথা রাখা)
- সিজদার সময় নারীরা নিজের হাত এবং পা শরীরের সঙ্গে মেলান। হাত কনুইসহ মাটিতে রাখবেন এবং শরীরকে যতটা সম্ভব সংক্ষেপিত করে রাখবেন।
- দলিল:
- হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর (রাযি.) বর্ণনা করেন, "নারীরা সিজদায় নিজেদের শরীর সঙ্কুচিত করবে এবং হাত কনুইসহ মাটিতে রাখবে।"
(সুনানুল কুবরা, ইমাম বায়হাকি, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা 223)
- হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর (রাযি.) বর্ণনা করেন, "নারীরা সিজদায় নিজেদের শরীর সঙ্কুচিত করবে এবং হাত কনুইসহ মাটিতে রাখবে।"
-
তাশাহুদে বসা
- তাশাহুদের সময় নারীরা উভয় পা ডান পাশে রেখে বসবেন। এভাবে বসার পদ্ধতি বিনয় ও পর্দা বজায় রাখে।
- দলিল:
- হযরত ইবনে উমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত, "নারীদের বসার পদ্ধতি হবে বিনয়ের সাথে, যেন তারা নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে।"
(মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা 390)
- হযরত ইবনে উমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত, "নারীদের বসার পদ্ধতি হবে বিনয়ের সাথে, যেন তারা নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে।"
-
তাসলিম (সালাম)
- সালামের সময় বিনয়ের সাথে মাথা ডানে ও বামে ঘোরাবেন।
নারীদের নামাজে পার্থক্যের মূল কারণ
হানফি মাযহাব মতে, নামাজে নারীদের ভিন্ন পদ্ধতির মূল কারণ হলো তাদের পর্দা ও বিনয় রক্ষা। পুরুষ ও নারীর শারীরিক গঠন এবং পর্দার প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ফিকহের এই বিধান নির্ধারিত হয়েছে।
উপসংহার
হানফি মাযহাবের দলিল ও ফিকহের আলোকে নারীদের নামাজ আদায়ে বিশেষত বিনয় ও পর্দার প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে। এই নিয়মগুলোর মূল ভিত্তি কুরআন ও সুন্নাহ। তাই, নারীদের উচিত এগুলো মেনে নামাজ আদায় করা।